আমাদের সম্পর্কে

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল হলো  বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর একটি সহযোগী ছাত্র সংগঠন, যা ১ জানুয়ারি, ১৯৭৯ সালে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠা করেন। “শিক্ষা, ঐক্য, প্রগতি” — এই মূল স্লোগানকে ধারণ করে, ছাত্রদল শুরু থেকেই গণতন্ত্র, ছাত্রদের অধিকার এবং জাতীয় উন্নয়নের পক্ষে অবিচলভাবে কাজ করে আসছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই এটি ছাত্র রাজনীতির একটি শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে উঠে দেশের রাজনৈতিক গতিপথকে প্রভাবিত করেছে এবং বহু প্রভাবশালী নেতার জন্ম দিয়েছে- যারা বাংলাদেশের শাসনব্যবস্থা এবং নীতিনির্ধারণে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। 

ছাত্রদলের প্রধান কার্যালয় ঢাকার নয়া পল্টনে অবস্থিত। বর্তমানে যারা বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত, তাদের মধ্যে অনেকেই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাথে যুক্ত ছিলেন।

প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যখন বিএনপির প্রতিষ্ঠা করেন, তখন তিনি ভবিষ্যতের নেতৃত্ব তৈরি করার জন্য এর একটি ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠা করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। তাই তিনি ১ জানুয়ারি ১৯৭৯ সালে কেন্দ্রীয়ভাবে এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠা করেন। তখনকার সময়ে জিয়াউর রহমানের জনপ্রিয়তার জন্য অনেক তরুণ শিক্ষার্থী অনুপ্রাণিত হয়ে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলে যোগদান করেনঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কাজী আসাদুজ্জামান-কে আহ্বায়ক করে ঐদিন ছাত্রদলের প্রথম কমিটি প্রকাশ করা হয়।

দেশের বিভিন্ন ইউনিটের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী ইউনিট হিসেবে পরিচিত। ছাত্র আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজনৈতিক সক্রিয়তার এবং নেতৃত্ব গঠনের এক অসামান্য স্থান হয়ে উঠেছে, যার মাধ্যমে সংগঠনের শীর্ষস্থানীয় সফলতার একটি মূখ্য অংশ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল,ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল:
আন্দোলন ও প্রতিরোধের ঐতিহ্য

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, অথবা, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল” বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ১৯৯০ সালের গণ-আন্দোলনে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সামরিক শাসন পতনে ঢাবি ছাত্রদল ঐতিহাসিক ভূমিকা রেখেছে এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সহযোগি হয়েছে। ছাত্রদল সবসময় রাজনৈতিক দমন রোধ এবং একাডেমিক স্বাধীনতা ও ছাত্রদের অধিকার রক্ষায় নিজেদের দৃঢ় অবস্থান ধরে রেখেছে এবং নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি নিজেদের অঙ্গীকার বজায় রেখেছে। যার ফলস্বরূপ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে শুধুমাত্র ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলেরই বাংলাদেশের দ্বিতীয় সংসদ খ্যাত ডাকসু নির্বাচনের সবকয়টি পদে নিরঙ্কুশ বিজয়লাভের বিরল কৃতিত্ব রয়েছে (১৯৯০-৯১ সালে আমানউল্লাহ আমান ও খায়রুল কবির খোকনের নেতৃত্বে)। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল দীর্ঘকাল ধরে হাসিনা সরকারের কর্তৃত্ববাদী শাসন, ফ্যাসিবাদী আচরণ এবং গুম-খুন ও বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে এক সাহসী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। রাজনৈতিক নিপীড়ন, বিরোধী কণ্ঠস্বর দমন, এবং অসংখ্য বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সরব প্রতিবাদ জারি রেখেছে। ফ্যাসিবাদী হাসিনার শাসন আমলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের বহু নেতাকে গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চা করার কারণে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে, অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়েছে, যার ফলে অনেকে অকালে মৃত্যুবরণও করেছেন।এই সব দমন-পীড়ন সত্ত্বেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা, একনায়ক শাসনতন্ত্রের বিরোধিতা এবং নিপীড়িতদের ন্যায়বিচার প্রদান করার লড়াইয়ে অবিচল থেকেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সবসময়ের মতন এখনো শিক্ষার্থীদের অধিকার, সুযোগ এবং বাকস্বাধীনতা রক্ষায় দৃঢ়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষার গুণগত প্রসারের মাধ্যমে জাতির ভবিষ্যত সমৃদ্ধির জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সর্বপ্রধান এই ইউনিটটি এখনও ছাত্র রাজনীতিতে একটি শক্তিশালী ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করছে। এদেশের তরুণদের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার যথাযথ প্রতিনিধিত্ব করে বাংলাদেশী জাতির সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থীদেরকে সত্যিকার অর্থেই জনগণের কল্যাণমুখী নেতৃত্ব প্রদানের জন্য প্রস্তত করে তুলতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা, শিক্ষার্থীদের ক্ষমতায়ন এবং বাংলাদেশের অগ্রগতিতে অবদান রাখার লক্ষ্যে নিবেদিত, এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান প্রদত্ত বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের আদর্শ অনুসরণ করে আরও উন্নতির পথে এগিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর।

Scroll to Top